অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. একে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, সিলেটবাসীকে দেওয়া প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ ও রেলপথ ব্রডগেজ লাইন প্রকল্প ২০১৮ সালের মধ্যেই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
রোববার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আশা করছি ২০১৮ সালের শেষদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেন ও আখাউড়া-সিলেট রেলপথ মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজে উন্নীত করার কাজ সম্পন্ন হবে।
সড়কপথের জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজন পড়লেও রেলপথের জন্য শুধু জমি দখলমুক্ত করলেই হয়ে যাবে।
বড় দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং’র বাংলাদেশ সফরকালে স্বাক্ষরিত ২৭টি চুক্তিতে সিলেটের বড় দুটি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। চতুর্থ স্থানে রয়েছে আখাউড়া-সিলেট ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।
এজন্য প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক ইচ্ছায় ও অপর দুই মন্ত্রী অনেক পরিশ্রম করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে ঢাকার সঙ্গে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। আর ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়তি দুটি সাইড লেনও থাকবে।
ড. মোমেন বলেন, দেশের উন্নয়ন দু’ধরণের; একটি দৃশ্যমান উন্নয়ন ও অপরটি অদৃশ্য উন্নয়ন। দৃশ্যমান উন্নয়নের পাশাপাশি অদৃশ্য উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। অদৃশ্য এই উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ প্রভৃতি।
এসব ক্ষেত্রে উন্নতি হলে দৃশ্যমান উন্নয়ন গতিশীল হয়। সরকার এ নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের জন্য টেকসই উন্নয়ন জরুরি। এক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।
এ অবস্থায় সিলেটে দৃশ্যমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন গতিশীল করতে এই দুটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিলেট অঞ্চলের গ্যাস সমস্যার কথা উল্লেখ করে সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, সিলেটে এখনও গ্যাসের বিশাল মজুদ রয়েছে। এগুলো উত্তোলন ও সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে সিলেটসহ সারাদেশের গ্যাসের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের সমর্থন অব্যাহত রাখতে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন ড. আবদুল মোমেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক লুৎফুর রহমান, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও সাবেক জেলা সভাপতি আ ন ম শফিকুল হক, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিজিত চৌধুরী, ফয়জুল আনোয়ার আলাউর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম প্রমুখ।